দিনের আলো প্রস্ফুটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নবজাতক শিশুর ক্রন্দন ভেঙে দেয় জননীর আবছা ঘুমকে। ক্ষুধা নিবারণের এ ইশারা বা কান্নার মাধ্যমে বোঝানোর এই কৌশলটি সদ্যোজাত শিশুরা সহজাত প্রবৃত্তি হিসেবেই পেয়ে থাকে। স্বাভাবিক শিশুরা পরবর্তীতে মাতৃভাষা আয়ত্ত্ব করার দক্ষতা রাখলেও শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষেরা সেই সুযোগ পায় না। তাদের মনের ভাব প্রকাশের একমাত্র মাধ্যমই হলো 'ইশারা ভাষা'।
আজ ২৩শে সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস। ভাব বিনিময়ের জন্য যেসকল মানুষ নিজেদের কণ্ঠকে ব্যবহার করতে পারেন না, তাদের ব্যবহার্য সাংকেতিক ভাষাকে সাধারণের বোধগম্য করতে এবং তাদের অধিকার আরও সুদৃঢ় করতে জাতিসংঘ কর্তৃক গুরুত্বের সাথে দিবসটি পালন করা হয়।
মানুষের মনের ভাব বিনিময়ের অন্যতম মাধ্যম হলো ভাষা। অন্যদের কথা শুনতে কিংবা নিজেদের মনের ভাব প্রকাশে অক্ষম মানুষগুলো ভাষার মাধ্যমে এই ভাব বিনিময়ের সুবিধা থেকে থাকে বঞ্চিত। তাই হাত, আঙুলসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবহারে তৈরি এই ভাষাটিই তাদের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু মেধাবী কিংবা কর্মঠ হওয়া স্বত্তেও প্রায়শই শিক্ষা ও কর্মজীবনে বিভিন্নভাবে হেনস্তা বা হীনমন্যতার শিকার হয় তারা, যা কখনোই কাম্য নয়।
তাই সারাবিশ্বের ইশারা ভাষীদের সাথে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন, তাদের এই বৈচিত্র্যকে যথোপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। যেনো তারা যথাযথভাবে উচ্চশিক্ষার গন্ডি পেরিয়ে সুস্থ কর্মপরিবেশে সফলভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়। একইসাথে এই ভাষার প্রকৃত গুরুত্ব উপলব্ধি করে মূক ও বধিরদের মানবাধিকার পুনরুদ্ধারে, সাধারণ মানুষেরও শ্রদ্ধার সহিত ইশারা ভাষা শেখায় আগ্রহী হওয়া প্রয়োজন। বিশ্বের প্রতিটি কোণায় যোগাযোগের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা লাভের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক সাংকেতিক ভাষায় কথা বলা এই সুন্দর মানুষদের- আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবসে এটিই KIN এর প্রত্যাশা।