'আর যদি দেখো পাশ দিয়ে যেতে
জুম থেকে ফেরা আদিবাসী কোনো সাধারণ নারী,
কী করে ভুলিতে পারি…'
সবুজ পাহাড়ের উঁচু-নিচু সৌন্দর্যের লীলাভূমির সঙ্গে নীলাম্বরের লুকোচুরি খেলার সাক্ষী ও প্রান্তিক ভূমিতে বসবাসরত সমৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর নাম 'আদিবাসী'। আদিবাসীরা যে কেবল পুরোনো ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি বহন করে তা নয়, বরং বর্তমান আদিবাসী যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উন্নত ধরণীর রুপরেখা সৃষ্টিতে, কাজ করছে রুপান্তরের সক্রিয় প্রতিনিধি হিসেবে।
আজ ৯ই আগস্ট, আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। বিশ্বব্যাপী আদিবাসী জনগণের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর এই দিনে পালিত হয় দিবসটি। যার এবারের প্রতিপাদ্য-
'Protecting the rights of Indigenous Peoples in Voluntary Isolation and Initial Contact'
জাতিসংঘ এর মতে, আদিবাসীদের প্রায় ২০০টি গোষ্ঠী স্বেচ্ছায় বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন বা প্রত্যন্ত বনাঞ্চলে শুধু ন্যূনতম প্রাথমিক যোগাযোগের মাধ্যমে বসবাস করে। এই সুন্দর পৃথিবীর বনাঞ্চলগুলো সুরক্ষিত রাখতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাদের অধিকার রক্ষায়ও আমাদের সকলের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি, যা এ বছরের প্রতিপাদ্যের মূল নির্যাস।
আমাদের দেশেও চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, মনিপুরী, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠী দিবসটি ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর পালন করে আসছে। পদে পদে বিভিন্ন বাঁধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতা অতিক্রম করে টিকে থাকা এই মানুষগুলো বরাবরের মতো আজও নিজেদের আত্মপরিচয়, মাতৃভাষা, আবাসভূমি ও সংস্কৃতি নিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন। বর্তমান যুগেও নানা ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত হেয় এবং বিভিন্ন মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয় তাদের, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সংখ্যায় ক্ষুদ্র হলেও স্বতন্ত্র জ্ঞানের ধারক এই জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কখনোই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সাম্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত হোক, গড়ে উঠুক বিচিত্র সংস্কৃতিতে ভরপুর সমৃদ্ধ পৃথিবী- আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে এটিই KIN এর কামনা।